চেনা অচেনায় পারুল

পারুল

পারুল

পারুল ফুলের নাম সকলের জানা, গানে কবিতায় ও এর উল্লেখ রয়েছে তবু বিলুপ্ত এই গাছটি সবার গোচরে আনার অভিপ্রায়ে লিখলাম এর সম্পর্কে। পারুল বলতে সচরাচর আমরা লতা পারুলকে চিনি যার বোটানিকাল নাম Mansoa alliacea, কিন্তু প্রকৃত পারুল যা লোক গাথায় উল্লেখ পাওয়া যায় “সাত ভাই চাম্পা ও একটি পারুল বোন” সেই পারুল গাছ মোটেও লতানো নয় বরং ৩০ থেকে ৪০ ফুট উছু বৃক্ষ বিশেষ। পারুল গাছের পাতা ১২ থেকে ১৮ ইঞ্চি লম্বা, বেশ চওড়া, আয়তাকার সূক্ষনকোনী কচি অবস্থায় রোমশ। মন্জুরী দন্ড দীর্ঘ ও বহু পৌষ্পিক। ফুল এক থেকে দেড় ইঞ্চি লম্বা অসমাঙ্গ ঘন্টাকার।
পারুল ফুল সম্পর্কে বিস্তর জানতে গিয়ে বুঝলাম Stereospermum suaveolens আমাদের সাত ভাইয়ের পারুল যাকে হিন্দীতে পাডাল, পাঠাল এভাবে ডাকা হয়েছে। Bignonia বর্গের Bignonia suaveolens প্রজাতির গাছ পারুল।

মস্কোর প্রাচ্য বিদ্যা ইনস্টিটিউটের রয়েরিখ কক্ষে পাওয়া জে.ডি. হুকারের মহাভারত কল্প-৭ খণ্ডের ফ্লোরা অব ব্রিটিশ ইন্ডিয়াতে পারুলের বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে Stereospermum suaveolens হচ্ছে পারুল যার রঙ হাল্কা বেগুনী অথচ বোটানিক নাম ও ইন্ডিয়ান পাটাল বা পাঠাল যদি পারুল হয়ে থাকে তবে সেই ফুলের রঙ হলুদ। হাল্কা বেগুনী বা একি রকম বৃক্ষে খয়েরী গোলাপী ফুলটির বোটানিক নাম : Stereospermum chelonoides। Jacaranda পরিবারের এবং বিগনোনিয়েসি গোত্রের গাছ। উভয় গাছের সাদৃশ্য প্রচুর এবং উভয় ফুলের সুগন্ধ রয়েছে।
হালকা খয়েরী ফুলটির কমন নাম ফ্রাগ্রেন্ট পাদরি, পাদেলি, পারোলী। একি সাথে হলুদ ফুলটিকে বলা হয়েছে পাদাল বা পারুল।পারুল গাছ সম্পূর্ণ ঔষধি গুনে ভরপুর একটি গাছ। পারুলের শেকড় চিকিৎসা শাস্ত্রে ব্যাবহারের উল্লেখ রয়েছে।