Etymology:
কাঁঠালের বৈজ্ঞানিক নামের প্রথমাংশ অ্যার্টোকার্পাস গ্রীক শব্দ, অর্থ আতাজাতীয় এক প্রকার ফল। হিটারোফিলাস লাতিন শব্দ, অর্থ হলো বিবিধপত্রী, অনেক সময়ই কাঁঠালের কচি পাতা খন্ডিত এবং এজন্য নামের সার্থকতা প্রশ্নসাপেক্ষে।
Benefits:
কাঁঠাল আমাদের অতি পরিচিত এবং প্রিয় গাছপালার অন্যতম। বাংলাদেশের ফলের মধ্যে তার স্থান বিশিষ্ট। এতো বিরাট ফলের ঐশ্বর্য আমাদের আর কোনো গাছের নেই। স্বাদ, গন্ধ, রস, রঙ এবং প্রতিটি অংশের ব্যবহারে কাঁঠাল তুলনাবিহীন। ফলের বাকল গরুর প্রিয় খাদ্য, শাঁস অত্যন্ত সুস্বাদু ও খাদ্যমূল্যে সমৃদ্ধ, বীজ উপাদেয় সব্জি এবং খাদ্যসম্পদে দরিদ্রজনের বন্ধু। জ্যৈষ্ঠ-আষাড়ে চাল দুর্মূল্য হলে কাঁঠাল তাদের মূল আহার্য হয়ে ওঠে। কাঁঠাল খাদ্যসম্মৃদ্ধ কিন্ত সহজপাচ্য নয়।
শুধু ফল নয়, দারুমুল্যও আকর্ষণীয়। কাঠ গাঢ়-হলুদ, মসৃণ ও আসবাবপত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহার্য। কাঠের হলুদ রঙ বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কসায়বস্ত্রের রঞ্জক।
Description:
চিরহরিৎ বৃক্ষ। পত্রবিন্যাস একান্তর। পত্র বিডিম্বাকৃতি, ৪”-৮” দীর্ঘ, চার্ম; বৃন্ত ১/২”-১” দীর্ঘ। উপপত্র স্বল্পস্থায়ী, খড়-সাদা। পুংমঞ্জরি ফলাকৃতি, মাংসল, ২”-৬” লম্বা। স্ত্রীমঞ্জরি বৃহৎ পরিণত অবস্থায় কখনো ৩০”x১২”। ফল কান্ড ও শাখা লগ্ন, যৌগিক। বীজ ডিম্বাকৃতি কিংবা বৃক্কাকৃতি, মাংসল।
কাঁঠাল দীর্ঘজীবী, সুশ্রী আদর্শ ছায়াতরু। গোলাকৃতি, কৌণিক কিংবা এলোমেলো সব ধরনের কাঁঠাল গাছই দেখা যায়। পুরনো কাঁঠাল গাছ মহীরুহের মতোই বিশাল ও বিস্তৃত। কান্ড অমসৃণ, ধূসর এবং সদ্যমোচিত বাকলের স্থান গাঢ়-রক্তিম। পাতা একান্তর পত্রবিন্যস্ত, বিডিমাবাকৃতি, কালচে সবুজ এবং ছায়াঘন। ঝরে পড়া কাঁঠাল পাতা গাঢ় কমলা। বৃক্ষশরীর শ্বেতকষপৃক্ত। কাঁঠালের মুকুল দুটি খড়-সাদা স্বল্পায়ু নৌকাকৃতি উপপত্রে বন্দী থাকে এবং পত্রোন্মচনের পর ঝরে পড়ে।
কাঁঠালের মুচিই তার মঞ্জরি। ফুল একলিঙ্গিক এবং পুং ও স্ত্রী মঞ্জরি স্বতন্ত্র। পুংমঞ্জরি ছোট, স্বল্পায়ু। স্ত্রীমঞ্জরি স্থায়ী এবং পরিণত অবস্থায় বিরাট। এরা প্রধানত কান্ডে, শাখায় এবং দৈবাৎ মূলেও ঝুলে থাকে। পরাগয়ান শেষে যথারীতি পুংমঞ্জরি শুকিয়ে যায় কিংবা ঝরে পড়ে, স্ত্রীমঞ্জরি তখন বাড়-বাড়ন্ত দেখা যায়। স্ত্রীমঞ্জরি তখন একটি বিরাট ফলে রূপান্তরিত হয়। কাঁঠালের প্রতিটি দানাই তার এক একটি ফলের প্রতীক।
কাঁঠালের ফল যৌগিক, এটি একটি গোটা মঞ্জরির পরিণতি, একক ফুলের অবদান নয়। বর্ণ, গন্ধ ও স্বাদভেদে এরা নানা জাতের। সাধারণত ফলের বাকল সবুজ, হালকা হলুদ কিংবা ঈষৎ তামাটে রঙের আর ভেতর হলুদ, সোনালী কিংবা পাংশু-সাদা। বীজ মাংসল ও খড়-সাদা কিংবা বাদামী।
শীত কাঁঠালের প্রস্ফুটনের কাল। ফল পাকে গ্রীষ্মে।