ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প -কাটা পড়ছে ২০০ গাছ

24 April, 2016


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রচণ্ড গরমে একদিকে নগরবাসী হাপিত্যেশ করছে, অন্যদিকে রাজধানীর বনানীর রেলগেটের পাশে জিল্লুর রহমান উড়ালসড়ক-সংলগ্ন এলাকায় বড় বড় গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। বন বিভাগ বলছে, ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প’ কাজের জন্য বন বিভাগের নগর বনায়ন প্রকল্পের প্রায় ২০০ গাছ কাটা হবে। তবে এসব গাছের শূন্যতা পূরণে দ্রুত আশপাশের এলাকায় নতুন করে বনায়ন করা হবে বলেও তারা জানিয়েছে। গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রস্তাবিত উড়ালসড়কের নিচে গাছ কাটা শুরু হয়েছে তিন দিন আগে। দরপত্রের মাধ্যমে কাওলা থেকে বনানী পর্যন্ত এলাকার গাছগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে আকাশি, ইউক্যালিপটাস, মেহগনি, অর্জুন, কড়ই, গর্জন, শিরীষ, শিশুসহ নানা প্রজাতির গাছ। ২০০ গাছের মধ্যে শুল্ক, ভ্যাটসহ ৮৭ হাজার টাকায় ৩০টি গাছ কিনেছেন এবাদত হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী। পান্থপথের খুলনা ডোর সেন্টারের মালিক এবাদত সাতজন শ্রমিক নিয়ে এসব গাছ কাটা শুরু করেছেন। গতকাল শনিবার বনানী এলাকায় দেখা গেছে, রেলপথের পাশে সূর্যের প্রখরতার মধ্যে কাজ করছেন সাতজন শ্রমিক। তাঁদের কারও হাতে ছিল ধারালো কুড়াল, কারও হাতে করাত, আবার কারও হাতে দা। এসব নিয়ে গাছের গোড়ায় আঘাত করছেন তাঁরা। দু-একজন আবারও গাছের ডালে বসে ডালপালা ছাঁটছিলেন। তবে সব কাজ সাতজন শ্রমিককে করতে হচ্ছে বেশ সাবধানে। কারণ, প্রচণ্ড গতি নিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপর রেলপথ দিয়ে আসা-যাওয়া করছে একটির পর একটি ট্রেন। এই অবস্থায় গাছ কাটতে একটু এদিক-সেদিক হলেই ঘটে যেতে পারে বড় দুর্ঘটনা। গাছের ক্রেতা এবাদত হোসেন বলেন, যেসব গাছ কাটা হবে, সেগুলো আগেই বন বিভাগের লোকজন লাল রঙে চিহ্নিত করেছেন। উড়ালসড়কের নিচ থেকে ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন পর্যন্ত ৩০টি গাছ দ্রুত কাটতে বলা হয়েছে তাঁকে। ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকদের গাছ কাটতে হচ্ছে জানিয়ে এবাদত হোসেন বলেন, নিচে ট্রেন যায়। আর পাশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। গাছের গুঁড়ি-ডালপালা রেললাইনে পড়লে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই গাছের কাটা অংশ ট্রেন চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত সরিয়ে নিতে হয়। প্রতিদিন অসংখ্য ট্রেন আসা-যাওয়ার কারণে তিন দিনে মাত্র চারটি গাছ কাটা সম্ভব হয়েছে। বন বিভাগে সামাজিক বনায়ন কেন্দ্রের রেঞ্জার মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজের জন্য এসব গাছ কাটতে বলা হয়েছে। বয়স্ক গাছ ছাড়াও মরে যাওয়া বেশ কিছু গাছ রয়েছে। তবে গাছের মালিক বন বিভাগ হলেও জায়গার মালিক অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। নতুন করে বনায়নের জন্য জরিপ করা হচ্ছে। স্থান নির্ধারণের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ ও সড়ক বিভাগের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ ছাড়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হলে এখানে নতুন গাছ লাগানোর বিষয়টি চিন্তা করা হচ্ছে।

Source: www.prothom-alo.com/bangladesh/article/839023

Photo Source: Skyscrapercity.com