বৃষ্টি নেই, মরে যাচ্ছে চা–গাছ


01 May, 2016.

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:

দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চা-গাছের পাতা ঝলসে ও ডাল শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এতে চায়ের উৎপাদন কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশের ১৬৬টি চা-বাগানের মধ্যে ফটিকছড়িতে আছে ১৭টি। চা-বাগানের কর্মকর্তারা জানান, উপজেলায় সর্বশেষ গত ১ এপ্রিল সামান্য বৃষ্টি হয়। দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় বাগানের আশপাশের ছড়া বা খালের পানি শুকিয়ে গেছে। মাটির আর্দ্রতা কমে গেছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ চা-বাগানেই সেচব্যবস্থা নেই। তাঁরা বলেন, এই পরিস্থিতিতে চা-গাছ মরে যাচ্ছে। মাটির আর্দ্রতা না থাকায় চা-গাছে কুঁড়ি গজাতে পারছে না। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী চা-গাছ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের পতেঙ্গা কার্যালয়ের উপপরিচালক সন্তোষ কুমার মাতব্বর বলেন, গত ২৭ মার্চ তিন মিলিমিটার এবং ১ এপ্রিল দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরপর আর বৃষ্টি হয়নি। আগামী এক সপ্তাহে আবহাওয়ার তেমন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। একাধিক বাগানের চা-শ্রমিকেরা জানান, আগে চা-বাগানে যথেষ্ট পরিমাণ ছায়াবৃক্ষ ছিল । এগুলো অবাধে কাটার কারণে এখন অনেক বাগানেই পর্যাপ্ত ছায়াবৃক্ষ নেই। ছায়া কম থাকায় খরার সময় সরাসরি রোদের কারণে চা-গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে চা-পাতার গুণাগুণও নষ্ট হয়। উপজেলার নেপচুন চা-বাগানের ব্যবস্থাপক কাজী ইরফান উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, পানি একদম শুকিয়ে গেছে। শ্রমিকদের খাওয়ার পানিও নেই। হালদাভ্যালি চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি না হলে চা-গাছ মরা শুরু হবে। এতে পাতা তোলা সম্ভব হবে না। দেরিতে বৃষ্টি হলে পাতা তোলা অন্তত এক মাস পিছিয়ে যাবে। চট্টগ্রাম চা-সংসদ কার্যালয় সূত্র জানায়, বৃষ্টি না হওয়ায় শিশু চা-গাছ দুর্বল ও পাতা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এ বছর ফটিকছড়ির চা-বাগানগুলোতে অন্তত ১ লাখ কেজি চা উৎপাদন কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে চা-পাতার উৎপাদন ছিল ৭৩ লাখ কেজি। চা-সংসদ চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজুল হাসান বলেন, উপজেলার বাগানগুলোর বেশির ভাগই ব্যক্তিমালিকানাধীন। যেসব বাগানে নিজস্ব সেচব্যবস্থা আছে, সেখানে খরার প্রভাব তেমন পড়ে না।

Source: www.prothom-alo.com/bangladesh/article/846025

Photo Source: www.prothom-alo.com/bangladesh/article/846025