আগুনে পুড়ল ১০ কোটি ডলারের দাঁত আর শিং


01 May, 2016.

আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হলো হাতির দাঁত ও গন্ডারের শিংয়ের বড় বড় ১১টি স্তূপ। সেখানে যে পরিমাণ হাতির দাঁত ছিল তার ওজন ১০৫ টন। কয়েক হাজার হাতি হত্যা করে এই দাঁত জোগাড় করেছিল চোরা শিকারিরা। আর জড়ো করা গন্ডারের শিংয়ের ওজন প্রায় দেড় টন। অন্তত ৩৪০টি বিলুপ্তপ্রায় গন্ডার হত্যা করা হয়েছে এ জন্য। আফ্রিকার কেনিয়ার নাইরোবি ন্যাশনাল পার্কে গতকাল শনিবার এই দাঁত ও শিংয়ে আগুন ধরানো হয়। কয়েক বছর ধরে চোরাচালানিদের কাছ থেকে এসব জব্দ করা হয়েছে। কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা প্রথম আগুন জ্বালিয়ে এ বহ্ন্যুৎসবের সূচনা করেন। স্থানীয় সময় বিকেলে এ উৎসবের সূচনা হয়। পাইপে করে কয়েক হাজার লিটার ডিজেল ও কেরোসিন হাতির দাঁতের স্তূপে ঢেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই বহ্ন্যুৎসবের উদ্দেশ্য হাতি শিকার বন্ধ এবং এর দাঁতের ব্যবসার বিষয়ে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারিতে জনমত সৃষ্টি করা। বিশ্বে এই প্রথম এত বিপুল পরিমাণ হাতির দাঁত একসঙ্গে পুড়িয়ে ফেলা হলো। কয়েক দিন ধরে এই আগুন জ্বলবে বলে মনে করা হচ্ছে । গতকাল বহ্ন্যুৎসবের উদ্বোধনের সময় প্রেসিডেন্ট কেনিয়াত্তা বলেন, ‘এই বিশাল বিশাল স্তূপ আমাদের প্রত্যয়ের প্রচণ্ডতার বহিঃপ্রকাশ।… কেউ কেনিয়ায় হাতির দাঁতের ব্যবসা করতে পারবে না। এই ব্যবসা চলতে দেওয়া মানে আমাদের হস্তীকুল নিধনের তথা ঐতিহ্য নিধনের অনুমোদন দেওয়া।’ এর আগে গত শুক্রবার হাতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে গঠিত আঞ্চলিক সংগঠন ‘জায়ান্টস ক্লাব ’-এর শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা বলেন, ‘হাতি হারিয়ে যাওয়ার অর্থ হলো আমাদের ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়া। আমরা এটা হতে দিতে পারি না।’ তিনি বিশ্বব্যাপী হাতির দাঁতের ব্যবসা বন্ধের দাবি জানান। পুরো আফ্রিকায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ হাতি রয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু প্রতিবছর এখানে ৩০ থেকে ৪০ হাজার হাতি শিকার করা হয়। এশিয়ার ক্রমবর্ধমান হাতির দাঁতের চাহিদা মেটাতেই চলে প্রকৃতির এই অনন্য প্রাণীর প্রাণসংহার। বিশ্ববাজারে হাতির দাঁতের চাহিদা ব্যাপক। কালোবাজারে এক কেজি দাঁতের দাম ১ হাজার ডলার। আর গন্ডারের শিংয়ের দাম আরও অনেক বেশি। কেজিতে ৬০ হাজার ডলার। এক কেজি সোনা বা কোকেনের দামের চেয়েও যা বেশি। চোরাচালান হওয়া হাতির দাঁতের শেষ ঠিকানা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। চীন সে দেশে হাতির দাঁত আমদানি আইন আরও কঠিন করেছে। তবে পরিবেশবাদীদের দাবি, এর আমদানি একেবারে নিষিদ্ধ করুক চীন।

Source: www.prothom-alo.com/international/article/845977

Photo Source: www.prothom-alo.com/international/article/845977