মির্জাপুরে ইটভাটার ধোঁয়ায় ধান নষ্ট

মির্জাপুরে ইটভাটার ধোঁয়ায় ধান নষ্ট

মির্জাপুরে ইটভাটার ধোঁয়ায় ধান নষ্ট

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের গাড়াইল এলাকায় একটি ইটভাটার চিমনি থেকে বের হওয়া ধোঁয়ায় প্রায় তিন একর জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। একই কারণে ভাটাসংলগ্ন এলাকায় গাছ থেকে ছোট ছোট আম ঝরে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, দুই বছর আগে এমএবি ব্রিকস নামের ওই একই ভাটার ধোঁয়ার কারণে পাশের গাড়াইল, গোড়াইল, ত্রিমোহন ও চাকলেশ্বর গ্রামের প্রায় ২০-২২ একর জমির ধান নষ্ট হয়ে যায়। পরে ভাটার পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও তা পর্যাপ্ত ছিল না।
গত শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, ওই ইটভাটার তিন দিকেই আবাদি জমি। পূর্ব দিকে বংশাই নদ বয়ে গেছে। ধোঁয়ার কারণে ভাটার উত্তর পাশে প্রায় তিন একর জমির ধানগাছের পাতা লালচে হয়ে মরে যাচ্ছে। ধানের নতুন ছড়া সাদা হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রচণ্ড গরমের সময় হঠাৎ বাতাস বইলে ইটভাটার ধোঁয়ায় ফসলের এ ধরনের ক্ষতি হয়। ইটভাটার কাছের জমির ক্ষতি বেশি হয়। ইটভাটার মালিকের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিপূরণ নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
এলাকাবাসী জানায়, ওই ভাটার পাশে ধানখেতগুলোয় সবেমাত্র ধান ধরতে শুরু করছিল। ৫ এপ্রিল রাতে এলাকাবাসী হঠাৎ গরম অনুভব করেন। অনেকে ঘর থেকে বের হয়ে গরমের সঙ্গে প্রচণ্ড দুর্গন্ধের কারণে বমি অনুভব করেন। তাঁরা বুঝতে পারেন এমএবি ইটভাটা থেকে ধোঁয়া ছেড়ে দেওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পরদিন সকালে এলাকাবাসী দেখেন খেতের ধানগাছের পাতা লালচে আকার ধারণ করেছে। এসব গাছ আস্তে আস্তে মরে যাচ্ছে।
গোড়াইল গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, ওই ভাটার ধোঁয়ায় তাঁদের ৫৬ শতাংশ জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিবেশী হামেদ আলীর ২১ শতাংশ, ময়ছেনের ২৮ শতাংশ ও আজাহার সিদ্দিকীর ২১ শতাংশ জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। মালিক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিচ্ছেন।
গাড়াইল গ্রামের ফারুক হোসেন সিদ্দিকী জানান, তাঁদের ৬০ শতাংশ জমির ধান একেবারে পুড়ে গেছে। এ ছাড়া গাছ থেকে আম ঝরে যাচ্ছে। গাছের পাতা পুড়ে ঝরে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ভাটার মালিক নানা ধরনের কথা বলছেন।
এমএবি ব্রিকসের মালিক আবু সাঈদ মিয়া বলেন, তিনি খেতের ধানের পাতা মরে যাচ্ছে দেখেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ভাটার পাশ দিয়ে মাটিবোঝাই গাড়ি চলে। ওই গাড়ির ধুলা ধানগাছের পাতায় লেগেও এ রকম হতে পারে।
টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আমিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। ওই এলাকা পরিদর্শন করে ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Source: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/835963/
Photo Source: www.dainikpurbokone.net