হাতিরঝিলের আদলে সাজবে বুড়িগঙ্গা


24 May 2016. বারেক কায়সার

বুড়িগঙ্গা নামটি এলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে প্রাণহীন এক নদীর ছবি। তবে আশার কথা, মৃতপ্রায় বুড়িগঙ্গার প্রাণ ফিরিয়ে আনতে একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনা হবে। নান্দনিক সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করা হবে। অবকাশ যাপনের জন্য নদীর তীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট, হাঁটার রাস্তা, পার্ক, বসার স্থান, নদীঘাট, পর্যটকদের জন্য প্রমোদতরী, ভাসমান বিনোদন কেন্দ্র ও রেস্তোরাঁ থাকবে। নদীর দুই পাশের প্রশস্ত সড়কে থাকবে উন্নত বাস সার্ভিস। অবশ্য এসব ব্যবস্থা হাতিরঝিলে চালু রয়েছে। বুড়িগঙ্গা নিয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রকল্পের অর্থায়ন করবে যৌথভাবে বিশ্বব্যাংক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। সিঙ্গাপুরের কালং ও সিঙ্গাপুর নদী এবং বাংলাদেশের হাতিরঝিলের আদলেই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। আগামী সপ্তাহে পরামর্শক সংস্থা বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে। জানা যায়, সিঙ্গাপুর সরকারের সাজানো কালং ও সিঙ্গাপুর নদীতে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমায়। সেই নদীর আদলে বুড়িগঙ্গাকে সাজাতে এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা মেয়রের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পরে চলছে নকশা প্রণয়নের কাজ। দক্ষিণ সিটির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম জানান, বুড়িগঙ্গাকে নবরূপ দিতে নতুন এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ‘ঢাকা ইনটিগ্রেটেড আরবান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড স্মার্ট সিটি ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট’ নামের প্রকল্পটির মধ্যে থাকবে শিকদার মেডিক্যাল থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত নদী পাড়ের আধুনিকায়ন। দু’পাড় ঘেঁষে থাকবে বিশেষ ধরনের সিরামিকের তৈরি ওয়াকওয়ে। দর্শনার্থীদের জন্য থাকবে বসার ছোট ছোট টেবিল। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য থাকবে বিনোদন সুবিধা সম্বলিত প্রমোদতরী। সব বয়স ও শ্রেণির মানুষের জন্য থাকবে বিনোদন পার্ক। থাকবে তিন বা পাঁচতারকা মানের কয়েকটি রিসোর্টও। সদরঘাটের ওয়াইজ ঘাটের বর্তমান অবস্থান ঠিক রেখে আরো আধুনিক করা হবে। সবুজায়নে ভরে দেয়া হবে নদীর পাড়। কিছু স্থান রাখা হবে খোলামেলা। তিন থেকে চারটি ভাসমান রেস্তোরাঁ থাকবে। নদীর দিকে যেসব ড্রেন এবং স্যুয়ারেজের পাইপলাইন রয়েছে সেগুলো বন্ধ করে দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা চালু করা হবে। বুড়িগঙ্গার পানির মান ঠিক রাখতে কয়েকটি পানি শোধনাগার (রিসাইকেল পন্ড) থাকবে। নদীর দু’পাড়ে থাকবে আধুনিক আলোকসজ্জা। দেশি-বিদেশি ফুল ও সাজবৃক্ষ দিয়ে সাজানো হবে পাড়। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের নাজুক চেহারাকে পরিবর্তন করার জন্য উন্নত দেশের নদী বন্দরের কায়দায় বিশেষভাবে ঢেলে সাজানো হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ফিরবে বুড়িগঙ্গার স্বাভাবিক প্রবাহ। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন এ প্রসঙ্গে বলেন, ঢাকার ইতিহাস বুড়িগঙ্গা এখন মৃতপ্রায়। এই নদীর প্রাণ ফিরিয়ে এনে নান্দনিকভাবে গড়ে তোলার জন্য আমরা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা একটা পর্যায়ে চলে যেতে পারবো। ফলে বুড়িগঙ্গা হবে রাজধানীর দ্বিতীয় হাতিরঝিল।

Source: www.ittefaq.com.bd/print-edition/city/2016/05/24/121340

Photo Source: dhakadailyphoto.blogspot.com <http://dhakadailyphoto.blogspot.com/2012/12/hajirjheel-project-and-buriganga-boat.html>