হিমলকুচি
লেখা: Sakib Chowdhury Abir
হিমলকুচি (Blue Tiger) নিমফ্যালিডি (Nymphalidae) পরিবারের সদস্য এবং ডানায়িনি উপগোত্রের অন্তর্গত এক প্রজাতির মাঝারি আকারের প্রজাপতি । এটি নীল ডোরা বা নীল বাঘ নামেও পরিচিত । হিমলকুচির বৈজ্ঞানিক নাম Tirumala limniace । এরা যূথচর পরিযায়ী আচরণ করে থাকে ।
এই প্রজাপতির ডানা ও গাত্রবর্ণের রঙ কালো, যেখানে নীলাভ সাদা বিভিন্ন আকৃতির দাগ থাকে । পুরুষ এবং স্ত্রী উভয় প্রকারের প্রজাপতির ডানার দৈর্ঘ্য ৯০-১০০ মিলিমিটার ।
সাধারণত এই জাতীয় প্রজাপতিটি মরু অঞ্চল ও হিমালয়ের অত্যধিক উচ্চতা ছাড়া প্রায় সর্বত্র দেখা যায়, বিশেষত সমভূমিতে । হিমলকুচিরা সচরাচর হালকা জঙ্গল ও অনুচ্চ ঝোপঝাড় ছাওয়া পরিবেশ পছন্দ করে । এরা খাবারের সন্ধানে সমভূমি ও পাহাড়ের ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায় ।
এরা সাধারণত অলস ও ধীর ভঙ্গিতে উড়ে থাকে, কিন্তু শত্রু দ্বারা আক্রমণের শিকার হলে এবং পরিযায়নের সময় দ্রুত এবং শক্তিশালী ভঙ্গিতেও উড়তে পারে ।
হিমলকুচির ডিম চকচকে রূপালি সাদা বর্নের আবার কখনও কখনও হলদেটে বর্নের হয় । দেখতে গম্বুজাকৃতি এবং অল্প লম্বাটে, গায়ে ওপর-নীচে শির টানা ।
শূককীট গুলি লম্বাটে আকারের এবং এদের গায়ে পর পর নীলচে সাদা, কালো ও সবজেটে হলুদ রঙের বেড় দেখা যায় । দেহের তৃতীয় এবং দ্বাদশ খন্ডে দুই জোড়া মাংসল শুঁড় দেখা যায়, যেটি অরা ইচ্ছামত নাড়াতে পারে । এই শূককীটগুলো Heliotropium indicum(হাতিশুঁড়), Asclepius curassivica(মরিচা ফুল), Calotropis gigantean(আকন্দ) এবং Tylophora(টায়লোফোরা) গোত্রের বিভিন্ন উদ্ভিদের পাতার রসালো অংশ আহার করে থাকে ।
মূককীট এর রঙ উজ্জ্বল সবুজ হয় এবং গায়ে সোনালি বিন্দু বিন্দু থাকে । দেহখন্ডের মাঝামাঝি একটা সোনালি বিন্দুর রেখা দেখা যায় ।
বাংলাদেশে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ক্যাম্পাস, নটর ডেম কলেজের ক্যাম্পাস, সীতাকুণ্ড, কাপ্তাই, রাঙামাটি, মধুপুর ইত্যাদি জায়গায় সচরাচর এদের দেখা মিলে । বাংলাদেশের বাইরে পাকিস্তান, পশ্চিমবঙ্গ সহ পুরো ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন, শ্রীলংকা, নেপাল, হংকং এবং ভিয়েতনামে এই প্রজাতির উপস্থিতি রয়েছে ।
তথ্যসূত্রঃ
(১)উইকিপিডিয়া
(২)Butterflies of Bangladesh by Shafique Haider Chowdhury & Monwar Hossain