নওগাঁয় সর্ববৃহত্ চুনাপাথরের খনির সন্ধান

22 April, 2016

A huge truck at work at the Lafarge limestone quarry in the Surprise Mountain area of Texada Island, British Columbia, Canada.

ইত্তেফাক রিপোর্ট ও নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁর বদলগাছি উপজেলায় চুনাপাথর খনির সন্ধান পেয়েছে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি)। এর ফলে সিমেন্ট কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল দেশেই পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

চুনাপাথর সন্ধান পাওয়ার সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয়দের মাঝে আনন্দ বিরাজ করলেও জমির ন্যায্য মূল্য না পাওয়া নিয়ে এলাকাবাসী শঙ্কিত আছেন। তবে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, খনিজ সম্পদ থেকে অর্জিত অর্থ ৫০ ভাগ এলাকার উন্নয়ন কাজে ব্যয় করার জন্য। এছাড়া এলাকাবাসী যাতে জমির ন্যায্য মূল্য পাওনা থেকে বঞ্চিত না হয় এজন্য পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আত্ন-কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ খনি পাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। প্রতিমন্ত্রী বলেন, উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের কাঁচপুর গ্রামে মাটির দুই হাজার ২২৪ ফুট গভীরে চুনাপাথরের সন্ধান মিলেছে। খনিটির সম্ভাব্য বিস্তৃতি ৫০ বর্গকিলোমিটার। নসরুল হামিদ বলেন, খনিটি বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হবে কিনা সে বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করবে জিএসবি। এজন্য দেড়-দুই বছর লাগতে পারে। লাভজনক বিবেচিত হলে বাণিজ্যিকভাবে চুনা পাথর উত্তোলনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

জেলার বদলগাছী উপজেলার তাজপুর এলাকায় খনন কাজে নিয়োজিত ড্রিলিং প্রকৌশলী মঈনউদ্দীন আহম্মেদ জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২২৮৫ ফুট খনন করা হয়েছে। জরিপ অনুসারে ৭১ফিট পর্যন্ত চুনাপাথরের খনিজের লেয়ার পাওয়া যায়। ড্রিলিং কার্যক্রম চলছে। লেয়ারের স্তর এখনও শেষ হয়নি। আমাদের লক্ষ্য কয়লা উত্তোলন। সেই কয়লা অনুসন্ধানের জন্য আমাদের খনন কাজ অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো জানান, যে চুনাপাথরের খবর আপনারা ইতোমধ্যে পেয়েছেন, সেই চুনাপাথরের নিচের স্তরে থাকে কয়লা। আমরা সেই কয়লার অনুসন্ধানেই খনন কাজ চালিয়ে যাব।

বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. নিহাল উদ্দীন জানান, সরকারিভাবে চুনাপাথরের খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এখানে ৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে দুই হাজার মিলিয়ন মেট্রিকটনেরও বেশি চুনাপাথরের মজুদ আছে বলে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এই খনি দেশের সর্ব-বৃহত্ খনি। আরো খনন করা হলে এর সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার ফিট খনন করলে কয়লা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো জানান, সিমেন্ট তৈরির প্রধান কাঁচামাল চুনাপাথর। সিমেন্ট তৈরিতে প্রায় ৭৫ ভাগই চুনাপাথর ব্যবহার করা হয়। তাজপুরে খনিতে যে পরিমাণ চুনা পাথর আছে আগামী দেড়শ’ বছর বাংলাদেশের সবগুলো সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করার পরও মজুদ থাকবে।

আমরা আশা করছি এখানে বিশাল আকারে চুনাপাথর রয়েছে যা উত্তোলন করলে বিদেশ থেকে আর কোনো চুনা পাথর আমদানি করতে হবে না। এর ফলে দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে। এবং উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে ঐ এলাকা।

Source: http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/first-page/2016/04/22/115467.
Photo Source: www.panoramio.com